কেন এলো কোয়ান্টাম মেকানিক্স ?
01/30daysসূর্য বা অন্য কোনো নক্ষত্রের তাপমাত্রা কত ? উত্তর - সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কাছাকাছি।কিংবা ফিলামেন্ট বাল্বগুলোর ফিলামেন্ট প্রায় ৩০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। বিজ্ঞানীরা কিন্তু কেবল রঙ দেখেই বলে দিতে পারেন এইসব !
বিষয়টি যদিও একেবারে সোজা মনে হচ্ছে,তাই না?কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানের মহান মহান বিজ্ঞানীরা এর কোনো সমাধান বের করতে পারেনি , সেই সময়ের প্রচলিত ক্লাসিক্যাল মেকানিক্স দিয়ে ।
ঐতিহাসিক আলোচনায় ব্ল্যাকবডি রেডিয়েশন
পদার্থবিজ্ঞানের যে শাখায় তাপ শক্তিকে অন্যকোনো যান্ত্রিক শক্তি যেমন - গতিশক্তিতে রূপান্তর নিয়ে আলোচনা করা হয় তার নাম তাপগতিবিদ্যা (Thermodynamics)।কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ মূলত তাপগতিবিদ্যার আলোচনার বিষয়।
কোনো বস্তু থেকে আলো আমাদের চোখে এসে পড়লে আমরা ঐ বস্তুটিকে দেখতে পাই।সূর্য থেকে আগত যে রঙকে এটি শোষণ করতে পারবে না ,আমরা বস্তুটিকে ঐ রঙেই দেখব। উদাহরণ - একটি পাকা আপেল কে লাল দেখায় কারণ এটি লাল ছাড়া বাকি ছয়টি রঙকেই শোষণ করে। কিন্তু ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ওয়েব বা আলোতে কেবল এই সাতটি রঙই থাকে না ।আলোর এ স্প্রেকট্রাম আরো অতি দীর্ঘ,যেখানে চোখে দেখার মতো তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো ৪০০-৮০০ আংস্ট্রোম এর ক্ষুদ্রগন্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ! কিন্তু,অবনীল (নীল এর চেয়ে ছোট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো) এবং অবলাল (লাল এর চেয়ে বড় তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো) প্রায় আলোর ৯০ ভাগের ও বেশি আলো আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় না । তাহলে এই আলো করে কি ? এই আলোই যখন কোনো বস্তু বিকিরণ করে , তখন আমরা তাপ অনুভব করি ।একেই বিজ্ঞানীরা Thermal radiation বলেন।এবার বুঝতে পারছেন কেন বাল্ব জ্বালালে আমরা তাপ অনুভব করি? বস্তুত বাল্বটি কেবল হলুদাভাব রঙের আলোই বিকিরণ করে না ,সাথে-সাথে অবলাল রঙের তাপও বিকিরণ করছে যা আমরা দেখতে পারছি নে।তাহলে আমরা এতক্ষণে নিশ্চয়ে পৌঁছালাম যে,তাপ হচ্ছে অদৃশ্যমান আলো । এই ঘটনার সাথে কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণের যোগসূত্র আছে ।তাহলে আমরা আবার ফিরে যাই ব্লাক বডিতে।
একটি আদর্শ ব্লাক বডি
এখন আমাদের একটি পদার্থ দরকার,যেটি কোনো আলোই বিকিরণ করে না বরং শোষণ করে ।তাহলে বস্তুটি কেমন দেখাবে ?- কালো ।এজন্য এর নাম ব্লাক বডি । এবার এই Black body কে কক্ষ তাপমাত্রায় রাখা হলো । বস্তুটিকে কালো দেখাবে এবং উত্তপ্ত করলে তাপশক্তি বিকিরণ করবে । কিন্তু এই তাপমাত্রা যদি আমরা 3000K এর কাছাকাছি নিয়ে যেতে থাকি তখন আর বস্তুটি আর কালো থাকবে না ;লালের দিকে শিফট করতে থাকবে ।আরো তাপমাত্রা বাড়াতে থাকলে কমলা ,হলুদ ,সবুজ … … বেগুনি এর দিকে শিফট করবে। এখানেই হচ্ছে সমস্যা !
কেন ক্লাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞান ব্ল্যাকবডি রেডিয়েশন ব্যাখা করতে পারে না ?মৌলকে তাপ দিলে যে বর্ণধারণ করে এটা হচ্ছে তার বর্ণালি ।এটা ঐ মৌলের নিজস্বতাকে ধারণ করে ।যেমন - Na সবসময় শিখা পরীক্ষায় নীল এবং Fe (লোহা ) লাল বর্ণ দেবে। কিন্তু ব্লাক বডির ক্ষেত্রে তা আর থাকছে না ।এই বিষয়টিকে আমরা গণিত দিয়েও বুঝতে পারি , শক্তি E =3/2nKbT ।আবার শক্তি ,E prop I2।তাই তাপমাত্রা বাড়াতে থাকলে আলোর তীব্রতা বাড়বে । অর্থাৎ যে মৌলটি লাল বর্ণ দিচ্ছে,এটি আরো গাঢ় লাল বর্ণ দিবে।এর সাথে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।এর ব্যাখা আমরা কোয়ান্টাম মেকানিক্স এ পাব,কেন এমনটি হয় ।
তার আগে কৃষ্ণবস্তু নিয়ে প্লাংক, স্টিফেন এবং ওয়াইন্স এর সূত্র ও ব্লাকবডি সম্পর্কিত গ্রাফটি বিশ্লেষণ করা যাক।
প্লাংক এর সূত্র আজ এপর্যন্তই !
ভিডিও:
